You are currently viewing নতুনদের জন্য কোন ডিজিটাল মার্কেটিং ভালো এবং কেন? 
নতুনদের জন্য কোন ডিজিটাল মার্কেটিং

ডিজিটাল মার্কেটিং একটি সম্ভাবনাময় সেক্টর। স্টাবল ক্যারিয়ার গড়ার জন্য অনলাইনে যত সেক্টর আছে তাদের মধ্যে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি এভারগ্রিন সেক্টর। এখানে অভিজ্ঞতা ও মার্কেটিং ট্যাক্টিক বেশি কার্যকরী হলেও নতুনদের জন্য ভবিষ্যৎ গড়ার অনেক সুযোগ রয়েছে। নিচে নতুনদের জন্য কোন ডিজিটাল মার্কেটিং ভালো সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

নতুনদের জন্য কোন ডিজিটাল মার্কেটিং ভালো

নতুন হিসেবে শুরু করার জন্য কোন ধরনের মার্কেটিং চ্যানেল ভালো হবে তা নিচে আলোচনা করা হলো। 

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

নতুন হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং দুনিয়ায় প্রবেশের সব থেকে কার্যকরী পথ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। এই সেক্টরের ভেতরে অনেক মাইক্রো নিস রয়েছে যেগুলো নতুন দের জন্য অনেক সহজে শেখা সম্ভব হয়। পাশাপাশি এই সকল বিষয়ে কমিউনিটিতে সাহায্য পাওয়া যায়। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর জন্য সব থেকে বেশি ব্যবহার হওয়া চ্যানেল- 

  • ফেসবুক 
  • ইউটিউব
  • লিংকডইন
  • পিন্টারেস্ট
  • টিকটক
  • ইন্সটাগ্রাম

ইত্যাদি। এইগুলো বাদেও আরও অনেক ফোরাম ভিত্তিক সাইট আছে যেখানে মার্কেটিং করা যায়। মূলত এই ধরনের মিডিয়াতে মার্কেটিং করতে চাইলে নিচের বিষয়গুলোতে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। 

  • উচ্চ মানের কন্টেন্ট তৈরি করা
  • ভিডিও কন্টেন্ট যেমন শর্টস ও রিল পাবলিশ করা
  • ফলোয়ার বৃদ্ধি করা
  • কমেন্ট, ম্যাসেজ ইত্যাদি ব্যবহার করে ভিউয়ার এর সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি করা
  • প্রোমোশন সহ অ্যাড রান করা
  • অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে ভিউয়ারকে কাস্টমারে পরিবর্তন করা

উপরে বর্ণিত বিষয় গুলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়। যাইহোক, নতুন দের জন্য এই সেক্টর অপেক্ষাকৃত সহজ হওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে আমারা দিনের বেশীরভাগ সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিবাহিত করি। যে কারণে এর কার্যকারিতা ও বিভিন্ন ফিচার সম্পর্কে আমাদের ধারনা থাকে। এতে মার্কেটিং কৌশল শিখতে পারলেই সঠিক পদ্ধতিতে কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়। 

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন

সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন

এসইও একটি ব্রড সেক্টর। সাধারণত ওয়েবসাইটে অর্গানিক পদ্ধতিতে ভিজিটর আনার জন্য এসইও ব্যবহার হয়ে থাকে। ডিজিটাল মার্কেটিং দুনিয়ায় এই সেক্টরের চাহিদা সবসময় ছিল এবং থাকবে। নতুন হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার জন্য অনেকেই এসইওকে প্রায়োরিটি দিয়ে থাকে। যাইহোক, এসইও দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করতে চাইলে সর্বপ্রথম এর প্রচলিত প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নিতে হিবে। বর্তমানে এসইও এর যে যে বিষয়ে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়-

  • টেকনিক্যাল এসইও 
  • অন পেজ এসইও
  • অফ পেজ এসইও 
  • লোকাল এসইও
  • সিমেন্থিক এসইও
  • কিওয়ার্ড রিসার্চ

সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইট বা অ্যাপকে র‍্যাঙ্ক করানোর জন্য উপরে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়। অন্যদিকে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন একটি কন্টিনিউয়াস প্রচেস। অর্থাৎ এখানে চাল কুকারে দিলাম আর ভাত হয়ে যাবে এই রকম নয়। আপনাকে নিয়মিত সার্চ কনসোল পরিক্ষা করতে হবে এবং স্ট্রাটেজি নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে হবে। 

অনলাইনে অনেক বেশি পরিমানে রিসোর্স থাকার কারণে সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন খুব সহজেই শেখা যায়। পাশাপাশি মেন্টরের মাধ্যমে বাস্তব জীবনে এসইও কীভাবে কাজ করে সে বিষয়ে ধারনা লাভ করা যায়। এই কারণে ডিজিটাল মার্কেটিং শুরু করার জন্য এসইও অনেক রিলায়েবল একটি সেক্টর। 

ভিডিও মার্কেটিং

ভিডিও তৈরি করে সেগুলোর মাধ্যমে মার্কেটিং করার পদ্ধতিকে ভিডিও মার্কেটিং বলে। ভিডিওকে ভিজিটর এঙ্গেজমেন্ট মেশিন বলেও আক্ষায়িত করা যেতে পারে। কারণ ৫৫% এর বেশি মানুষ টেক্সট কন্টেন্ট পড়ার থেকে ভিডিও কন্টেন্ট দেখায় আগ্রহী হয়ে থাকে। এ থেকে বোঝা যায় মানুষ ভিডিও দেখতে বেশি সাচ্ছন্দবোধ করে থাকে। 

এই কারণে দিন দিন ভিডিও মার্কেটিং সেক্টর আরও বড় হচ্ছে। ছোট প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বড় বড় কর্পোরেশন তাদের মার্কেটিং বাজেটের মধ্যে ভিডিও মার্কেটিং এর জন্য বাজেট রেখে থাকে। এই কারণে ভিডিও মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিং দুনিয়ায় এক শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে। মূলত ভিডিও মার্কেটিং শেখার জন্য যে যে বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে- 

  • স্ক্রিপ্ট রাইটিং
  • ভিডিও তৈরি বা প্রোডাকশন
  • ভিডিও এডিটিং
  • স্টোরিটেলিং
  • ভিডিও এসইও

একজন ভিডিও মার্কেটার হিসেবে এই বিষয় গুলোতে পারদর্শী হতে হবে। পাশাপাশি ক্রিয়েটিভ ভিডিও তৈরি করে বেশি বেশি ভিজিটর আনতে হবে এবং সেগুলোর এঙ্গেজমেন্ট বৃদ্ধি করতে হবে। যাইহোক, একটি টেক্সট কন্টেন্ট থেকে একটি ভিডিও কন্টেন্টে এই কাজ অনেক সহজেই করা যায়। যেমন কোন ভিডিও ভাইরাল হলে সেখানে অটোমেটিক ভিজিটর এবং ফলোয়ার বৃদ্ধি পায়। নতুনদের জন্য ভাইরাল ভিডিও তৈরির পদ্ধতি বের করতে পারলেই কাজ আরও সহজ হয়ে যাবে। 

ই-মেইল মার্কেটিং  

অ্যাফিলিয়েট থেকে শুরু করে B2B বিজনেস সহ সকল ধরনের লিড সংগ্রহ এবং তাদের কাস্টমারে পরিবর্তন করার জন্য ই-মেইল মার্কেটিং অত্যন্ত কার্যকরী। ই-মেইল মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি ডিমান্ডফুল চ্যানেল। কারণ এখানে কাস্টমারের সাথে সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হয়। এতে কাস্টমার রিলেশনশিপ আরও দৃঢ় হয়। 

লয়াল কাস্টমার তৈরিতে এই মার্কেটিং ধারা অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। সাধারণত ই-মেইল মার্কেটিং এ-

  • লিড সংগ্রহ
  • ই-মেইল লিস্ট বিল্ডিং
  • লিড সর্টিং (লিড বাছাই)
  • ক্যাম্পেইন তৈরি
  • ই-মেইল কপি তৈরি
  • ই-মেইল অটোমেশন 

এই বিষয় গুলোতে বেশি পরিমানে গুরুত্ব দিতে হয়। নতুন হিসেবে যদি এঙ্গেজিং কপি লেখার কনফিডেন্স থাকে তাহলে এই সেক্টর উপযুক্ত। অন্যথায় প্রপার ট্রেইনিং বা কোর্স করার মাধ্যমে ই-মেইল মার্কেটিং শেখা সম্ভব। জাইহোক, ছোট থেকে বড় সব কোম্পানি আউটরিচের জন্য ই-মেইল মার্কেটিং ইউজ করে থাকে। 

নিজস্ব মেইল সার্ভার তৈরি করে অথবা মেইল সার্ভার সার্ভিস নিয়ে ই-মেইল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা যায়। নতুন হিসেবে অল্প খরচে যেন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা যায় সে দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। 

কন্টেন্ট মার্কেটিং

কন্টেন্ট মার্কেটিং

যে কোন ধরনের অডিও, ভিডিও ও টেক্সট কন্টেন্ট তৈরি করে টাতে ভিজিটর আনাকে কন্টেন্ট মার্কেটিং বলে। আপনি বর্তমানে যে ব্লগ টা দেখতে পাচ্ছেন এটি কিন্তু কন্টেন্ট মার্কেটিং দ্বারা তৈরি করা। মূলত কন্টেন্ট মার্কেটিং করার জন্য যে যে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয় টা হচ্ছে- 

  • স্ক্রিপ্ট রাইটিং
  • ব্লগ রাইটিং
  • প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন রাইটিং
  • পিডিএফ রাইটিং
  • ই-বুক রাইটিং 
  • ইনফোগ্রাফিক্স
  • প্রেজেন্টেশন তৈরি
  • কপিরাইটিং
  • স্টোরি টেলিং
  • অডিওবুক তৈরি
  • ভিডিও তৈরি
  • ইমেজ তৈরি

উপরিউক্ত বিষয় গুলো কন্টেন্ট তৈরি করার সেক্টরের মধ্যে পরে। এখন এগুলোর মাধ্যমে ভিজিটর আকর্ষণ করার পদ্ধতি হচ্ছে কন্টেন্ট মার্কেটিং। একজন নতুন ডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে সব থেকে সহজ কাজের মধ্যে পরে এই কন্টেন্ট মার্কেটিং করা।

উপরে বরনিত বিষয় গুলোর মধ্যে আপনি আপনার পছন্দমতো চ্যানেল বেছে নিয়ে কোর্স করে অথবা অনলাইনে শিখে নিতে পারবেন। তারপর পার্সোনাল প্রোজেক্ট করার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। মনে রাখবেন ডিজিটাল মার্কেটিং দুনিয়ায় আপনার কনফিডেন্স থাকার পাশাপাশি পোর্টফলিয়ো থাকতে হবে। 

ই-কমার্স মার্কেটিং

ই-কমার্স ডিজিটালাইজেশনের একটি কার্যকরী উপহার। এর বদৌলতে আমরা ঘরে বসেই কেনা কাটা করতে পারছি। সময়ের সাথে সাথে দেশে এবং বিদেশে এই সেক্টর ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। যে কারণে ই-কমার্সে মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বেড়ে চলছে। নতুন ডিজিটাল মার্কেটারদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। 

কারণ একটি একটি সম্ভাবনাময় সেক্টর। ই-কমার্স মার্কেটিং করার মাধ্যমে আপনি দুইটি বিষয়ে লাভবান হবেন। যেমন আপনি অনলাইন বিজনেস কীভাবে পরিচালিত হয় টা জানবেন এবং এসইও ও কন্টেন্ট মার্কেটিং কি এবং কীভাবে করে সে সম্পর্কে ধারনা পাবেন। সব মিলিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে এবং ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গড়ায় সহায়তা পাবেন। ই-কমার্স মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে যে যে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে-

  • প্রোডাক্ট লিস্টিং
  • প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন অপটিমাইজেশন
  • কনভার্সন রেট অপটিমাইজেশন (CRO)
  • ই-কমার্স ই-মেইল মার্কেটিং

শেষ কথা 

ফ্রীল্যান্সিং, জব অথবা নিজস্ব এজেন্সি দেওয়ার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক সম্ভামনাময় সেক্টর। বিজনেস গ্রোথ বৃদ্ধি করতে গতানুগতিক মার্কেটিং এর পাশাপাশি ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে নতুন অবস্থায় শুরু করতে কোন চ্যানেল আমাদের জন্য ভালো হবে তা নিয়ে কনফিউশনে থাকি। এই লেখায় নতুনদের জন্য কোন ডিজিটাল মার্কেটিং ভালো সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। 

Leave a Reply