You are currently viewing ওয়েবসাইট স্লো হওয়ার কারণ ও ওয়েবসাইট স্লো হলে কী করব?
ওয়েবসাইট স্লো হলে কী করব

ওয়েবসাইট স্লো হওয়ার কারণে অনেক ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। বিশেষ করে এসইও প্রোফাইলের রেপুটেশনে হিউজ পরিমাণ ড্যামেজ তৈরি হয়ে থাকে। পাশাপাশি ওয়েবসাইট স্লো হলে ভিজিটর বিরক্ত বোধ করে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে কম্পিটিটরের ওয়েবসাইটে চলে যায়। এতে দেখা যায় আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি বিজনেস রেপুটেশন নষ্ট হয়ে যায়। একটি ওয়েবসাইট অনেক গুলো কারণে স্লো হয়ে থাকে। এখানে ওয়েবসাইট স্লো হলে কী করব এবং কীভাবে স্লো ওয়েবসাইট সমস্যা সমাধান করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

ওয়েবসাইট স্লো হলে কী করব

ওয়েবসাইট স্লো হওয়ার যেমন অনেক কারণ আছে তেমনি এটি সমাধানের অনক কারণ রয়েছে। নিচে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

সার্ভার পারফর্মেন্স

ওয়েবসাইট স্লো হওয়ার পেছনে সার্ভার কনফিগারেশন অনেক বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে। সাধারণত সার্ভার নেওয়ার পূর্বে ওয়েবসাইটের ধরণ দেখে বিবেচনা করতে হয়। যেমন ধরুন আপনি একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করবেন। এখন ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য সব থেকে আদর্শ সার্ভার হচ্ছে ডেডিকেটেড VPS অথবা ডেডিকেটেড সার্ভার। কারণ এই ধরনের সার্ভারের রিসোর্স গুলো একই সাথে অনেক গুলো ইউজার ইউজ করে না। 

এতে ওয়েবসাইটে ভিজিটর কমবেশি হলেও পারফর্মেন্সে কোনো প্রভাব ফেলে না। অন্যদিকে উন্নত হার্ডওয়্যার সমৃদ্ধ সার্ভার ওয়েবসাইটের ডাটা দ্রুত সময়ে আদান-প্রদান করে থাকে। যে কারণে ল্যাটেন্সি কমে যায় এবং ওয়েবসাইট অনেক দ্রুতি লোড হয়। এই সমস্যা সমাধান করার জন্য প্রথমে সার্ভারের কনফিগারেশন আপগ্রেড করে নিতে হবে। যেমন আপনি যদি শেয়ার্ড সার্ভার ইউজ করে থাকেন তাহলে তা এখনি VPS বা ডেডিকেটেড সার্ভারে মুভ করে নিন। এতে ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি এসইও স্কোর বুস্ট হবে। 

সার্ভার পারফর্মেন্স

বড় মিডিয়া ফাইল

আমাদের দীর্ঘ সময়ের স্পিড অপটিমাইজেশনের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে বলতে পারি ওয়েবসাইট স্পিড কম হওয়ার পেছনে বিগ মিডিয়া ফাইল কালপ্রিট হিসেবে কাজ করে। আমরা জানি যখন একটি ব্রাউজারে কোন ওয়েবসাইট ইউআরএল এন্ট্রি করা হয় তখন তা সার্ভারে উক্ত ওয়েবসাইটের ফাইলের জন্য রিকোয়েস্ট করে। পরে সার্ভার সেই ফাইল ব্রাউজারের কাছে রিটার্ন পাঠায়। পরে ব্রাউজার উক্ত ফাইল গুলো কম্পিউটার বা মোবাইল সিস্টেমে ডাউনলোড করে তারপর তা আমাদের সামনে প্রদর্শিত হয়। 

অর্থাৎ ওয়েবসাইট পুরোপুরি ভিজিবল হওয়ার জন্য রিসোর্স গুলো ডাউনলোড হতে হয়। এখন আপনি যদি বড় বড় ইমেজ ও ভিডিও দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করেন তাহলে ব্রাউজারের এই ফাইল গুলো ডাউনলোড দিতে বেশি সময় প্রয়োজন হবে। যা ওয়েবসাইট স্লো করে দেবে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ইমেজ সাইজ যেমন কমাতে হবে তেমনি মিডিয়া ফাইল গুলো কম্প্রেস করে নিতে হবে। বর্তমান সময়ে ইমেজ ও ভিডিও ভাই কম্প্রেস করে WebP ও WebM এ কনভার্ট করলে তা দ্রুত ডাউনলোড ও রেন্ডার হয়। 

প্লাগিন ও স্ক্রিপ্ট

আমরা যারা ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট তৈরি করি তাদের মধ্যে অতিরিক্ত প্লাগিন ইউজ করার একটি প্রবণতা রয়েছে। এমন অনেক ওয়েবসাইট ওনার রয়েছে যারা থিমের হেডারে একটি জাভাস্ক্রিপ্ট কোড অ্যাড করার জন্য প্লাগিন ইউজ করে থাকে। এরকম অহেতুক কাজের জন্য প্লাগিন ইউজ করে ওয়েবসাইট ভারী করার কারণে পেজ স্পিড কমে যায়। কারণ এই প্লাগিন গুলো ওয়েবসাইটে অযথা JS ও CSS ফাইল অ্যাড করে। এগুলো ওয়েবসাইটের Render Blocking Element বৃদ্ধি করে। যা ওয়েবসাইটের লোড স্পিডে সরাসরি প্রভাব ফেলে। 

এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ক্যাশিং ইউজ করার পাশাপাশি স্ক্রিপ্টগুলোকে কমপ্রেস করে নিতে হবে। সার্ভার সাইড থেকে কমপ্রেস করার পাশাপাশি স্পিড অপটিমাইজেশন প্লাগিন যেমন Litespeed Cache ও WpRocket ইউজ করতে পারবেন। এই টুল গুলায় ক্যাশিং এর পাশাপাশি স্ক্রিপ্ট ও মিডিয়া ফাইল মিনিফাই, লেজিলোড ও ডিলে করা যায়।

এগুলোর পাশাপাশি ওয়েবসাইট তৈরি করার সময় জটিল ও ঝামেলা পূর্ণ কোড বা টেকনলজি ইউজ না করা ভালো। কারণ ঝামেলাপূর্ণ কোড ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা ধীর গতির করে দেয়। যা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার অভিজ্ঞতা ও লোড স্পিড অনেক কমিয়ে দেয়। আমাদের ITNutHosting এ লাইটস্পিড সার্ভার ইউজ করা হয় যা এমনিতেই অনেক ফাস্ট হয়ে থাকে। অন্যদিকে আমাদের সার্ভার গুলোতে ওয়েবসাইট স্পিড যেন অপ্টিমাইজ থাকে সে জন্য প্রয়োজনীয় টেকনোলজি সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

কমদামি হোস্টিং 

হোস্টিং হচ্ছে ওয়েবসাইটের প্রাণ। হোস্টিং যদি ভালো না হয় তাহলে ওয়েবসাইট স্লো হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেক সমস্যার তৈরি হয়। যেমন কমদামি বা নিম্নমানের হোস্টিং প্রায় সময় ডাউন থাকে। সিকিউরিটি শক্তিশালী না হওয়ার কারণে ভাইরাস অ্যাটাক থেকে শুরু করে ম্যালওয়্যার অ্যাটাকে ওয়েবসাইট ধ্বংস হয়ে যায়। এছাড়াও আরও অনেক সমস্যা আছে যা ওয়েবসাইট মালিকদের ঘুম হারাম করে দেয়। 

অন্যদিকে ভালোমানের হোস্টিং ব্যবহার করা হলে ওয়েবসাইট যেমন সবসময় আপ থাকে তেমনি অনেক ছোট ও বড় ইস্যু থেকে মুক্ত থাকা যায়। ভালোমানের হোস্টিং থেকে যে ধরনের সার্ভার দেওয়া হয় সেগুলো ওয়েল-মেইনটেইন্ড হয়ে থাকে। পাশাপাশি এর হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার আপডেটেড থাকে। যা ওয়েবসাইট পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করে ও ওয়েবসাইট স্পিড ইম্প্রুভ করে। 

ক্যাশিং সমস্যার সমাধান

ক্যাশিং হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ টুল। এর কাজ হচ্ছে ওয়েবসাইটে যে সকল রিপিটিভ টাস্ক বা রিসোর্স আছে সেগুলো ডাউনলোড করে রাখা। যাতে ব্রাউজারের উক্ত ফাইল গুলো বারবার ডাউনলোড করার প্রয়োজন না পরে। এতে ওয়েবসাইট ভিজিটরের কাছে অনেক কম সময়ের মধ্যে লোড হয়ে থাকে। 

সাধারণত ব্রাউজার ক্যাশের পাশাপাশি অবজেক্ট ক্যাশ নামক একটি টেকনোলজি রয়েছে যা অবশ্যই সচল করে রাখতে হবে। ক্যাশিং প্লাগিনগুলো সার্ভার সাইড ক্যাশিং সুবিধা দেয় যা স্ট্যাটিক এলিমেন্ট গুলো ক্যাশ করে রাখে। 

কন্টেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক 

কন্টেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক 

CDN এর কাজ হচ্ছে মূল ওয়েবসাইটের একটি কপি ভার্শন ডাউনলোড করে ভিজিটরকে তার কাছের সার্ভার থেকে তা প্রদর্শন করানো। সহজ কোথায় বলতে গেলে এটি এমন একটি প্রযুক্তি যা ওয়েবসাইট ক্লোন করে। ক্লোন করা ওয়েবসাইট উক্ত CDN সার্ভিসের বিশ্বব্যাপি থাকা ক্যাশ সার্ভারে জমা করে রাখে। যখন কোন ভিজিটর উক্ত ওয়েবসাইট ভিজিট করার চেষ্টা করে তখন তার লোকেশনের সব থেকে কাচের সার্ভার থেকে ওয়েবসাইট লোড হয়।

এতে ল্যাটেন্সি অনেক কমে যায় পাশাপাশি ব্রাউজারের ক্যাশ হয়ে থাকা কন্টেন্ট লোড হয়। যে কারণে ওয়েবসাইট অনেক দ্রুত সময়ের মধ্যে ওপেন হয়। তাছাড়া ওয়েবসাইটকে বারবার তার মেইন সার্ভারের সাথে কন্টাক্ট করতে হচ্ছে না। যা ওয়েবসাইট দ্রুত লোড হতে সহায়তা করে। 

হোস্টিং রিসোর্স কম

শেয়ার্ড এবং অল্প পরিমাণ রিসোর্স সমৃদ্ধ হোস্টিং গুলো ওয়েবসাইট স্লো করে দেওয়ার জন্য দায়ী। সাধারণত হোস্টিং রিসোর্স কম হলে ওয়েবসাইট ব্রাউজারে ঠিকমতো লোড হতে স্বাভাবিকের থেকে বেশি সময় নেয়। অন্যদিকে শেয়ার্ড হোস্টিং এ একই সার্ভারের রিসোর্স অনেক গুলো ইউজারের মধ্যে ভাগ করা থাকে। ইউজার গুলোর মধ্যে কোন একজনের ওয়েবসাইট যদি বেশি রিসোর্স ইউজ করে তাহলে বাকি ওয়েবসাইট গুলো স্লো হয়ে পরবে।

কারণ শেয়ার্ড হোস্টিং এ সার্ভারের মোট রিসোর্স সবার মধ্যে বাগ করা থাকে কিন্তু সেগুলো ইন্টার-কানেক্টেড। কোন কারণে একটি ইউজারের ওয়েবসাইট অনেক বেশি ভিজিটর চলে আসলে বাকি ইউজারের থেকে রিসোর্স বেশি ভিজিটর আসা ওয়েবসাইটে সাপোর্ট দিতে চলে যায়। যা অন্যান্য ইউজারের ওয়েবসাইটকে স্লো করে দেয়। এর থেকে মুক্তি পেতে সাধারণ পোর্টফলিও বা ব্লগ সাইট নাহলে শেয়ার্ড হোস্টিং ইউজ না করাই ভালো।  

শেষকথা 

ওয়েবসাইট স্লো হলে কি করবো এটি নিয়ে আমাদের সব সময় একটি দ্বিধার মধ্যে থাকতে হয়। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের পূর্বে ওয়েবসাইট স্লো কেন হয় সে সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। ব্যাথা কোথায় হচ্ছে তা না জানলে মলম লাগাবো কোথায়? ঠিক তেমনি ওয়েবসাইট স্লো হলে এর কারণ খুঁজে বের করে তা সমাধান করতে হবে। আমাদের আজকের লেখায় আমরা ওয়েবসাইট স্লো হলে কী করব এবং তা সমাধান করার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। 

Leave a Reply