You are currently viewing ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের ক্র্যাশ রিকভারি প্লান ও করনীয়
ক্র্যাশ রিকভারি প্লান

বর্তমান সময়ে  ওয়েবসাইট একটি বিজনেসকে রিপ্রেজেন্ট করে। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে সহজে ওয়েবসাইট তৈরি করা যায় জন্য অনেকেই এই মাদ্ধম ব্যবহার করে থাকে। তবে অনেক কারণে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ক্রাশ হয় এবং গুরুত্বপূর্ণ ডাটা চলে যায়। ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের ক্র্যাশ রিকভারি প্লান করে আমরা এই সম্ভাব্য ক্ষতি থেকে সহজেই নিজেদের মুক্ত রাখতে পারি। আমাদের আজকের লেখায় কীভাবে ক্র্যাশ রিকভারি প্লান করা হয় এবং তা কীভাবে অ্যাপ্লাই করা হয় তা নিচে বর্ণনা করা হলো। 

আপনার ক্র্যাশ রিকভারি প্লান কেন প্রয়োজন? 

ওয়ার্ডপ্রেস একটি স্টাবল কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। এর ডেভেলপারগুলো সবাই ওয়ার্ল্ডক্লাস এবং তারা ওয়ার্ডপ্রেসকে নিয়মিত মেইনটেইন করে থাকে। এতকিছুর পরেও অনেক সময় ওয়ার্ডপ্রেসে আনএক্সপেক্টেড সমস্যার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ ঠিক ভাবে চলতে চলতে হ্যাকিং সহ অন্যান্য সিকিউরিটি ইস্যুর কারণে সাইট ডাউন হয়ে থাকতে পারে। 

এখন একটি রানিং ওয়েবসাইট যদি এই রকম সমস্যার সম্মুখীন হয় তাহলে বড় ক্ষতির মধ্যে পরতে হয়। একজন ওয়ার্ডপ্রেস লাভার এবং সাইট ওনার হিসেবে আপনি কখনোই এই অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে চাইবেন না। 

আপনার যাতে এই ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনার সম্মুখীন হতে না হয় সে জন্য ক্র্যাশ রিকভারি প্লানের প্রয়োজন রয়েছে। এটি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ তা নিচে দেওয়া হলো। 

ডাটা লস প্রতিরোধ 

ওয়েবসাইট ক্র্যাশ করলে সব থেকে বড় যে সমস্যা হয় তা হচ্ছে ডাটা লস। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটে যদি গুরুত্বপূর্ণ ডাটা থাকে তাহলে ক্র্যাশ করার জন্য ডাটা ডিলিট বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হচ্ছে ব্যাকআপ। ক্র্যাশ রিকভারি প্লান, ডাটা যাতে ব্যাকআপ থাকে তা নিশ্চিত করে।  

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট

বিজনেস রেপুটেশন রক্ষা

একটি ওয়েবসাইট আপনার বিজনেসের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মাধ্যমে ভিজিটরের মধ্যে যোগাযোগ হয় ও একটি বিশ্বাস তৈরি হয়। কোন কারণে যদি আপনার ওয়েবসাইট অফলাইনে চলে যায় তাহলে উক্ত ভিজিটর আপনার বিজনেস সম্পর্কে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। ক্র্যাশ রিকভারি প্লান নিশ্চিত করে যে আপনার সাইট যেন কখনো অফলাইনে না যায়।  

বিরতিহীন ব্যবসায়িক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে 

কোন কারণে যদি আপনার ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে যায় তবে ক্র্যাশ রিকভারি প্লান দ্রুত তা লাইভ করতে সহায়তা করে। অর্থাৎ আপনার ব্যবসায়িক কার্যক্রম সচল রাখার জন্য আপনার এই প্ল্যানের প্রয়োজন রয়েছে। 

ক্র্যাশ রিকভারি প্লান

নিচে একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট কোন কারণে ক্র্যাশ করলে তা কীভাবে রিকভার করা যাবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। 

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের দুর্বলতা খুঁজে বের করতে হবে

ওয়েবসাইট ক্র্যাশ প্রতিরোধ করার পূর্বে আমাদের জানতে হবে এটি কি থেকে সৃষ্টি হয়। সাধারনত একটি ওয়েবসাইট বিভিন্ন কারণে ডাউন থাকতে পারে। এদের মধ্যে সার্ভার ক্র্যাশ, প্লাগিন সমস্যা, ব্রোকেন ডাটাবেস, ইনকমপ্লিট আপডেট এবং বিভিন্ন ধরনের ওয়ার্ডপ্রেসের ইরর অন্যতম। 

বর্তমান সময়ে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে সমস্যা হওয়ার পেছনে আউটডেটেড থিম ও প্লাগিন ফাইল থাকার পাশাপাশি হ্যাকিং এবং ম্যালওয়ার সব থেকে বেশি দায়ী। তো আপনাকে এই সমস্যা থেকে নিজেকে মুক্ত থাকতে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। 

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট পরিচালনা করার সময় আপানাকে সচেতন হতে হবে। উপরে বর্ণিত সমস্যা গুলো অনেক সময় আপনার নিজের কারনেও হতে পারে অথবা ওয়ার্ডপ্রেসের নিজস্ব সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় আপনি কোথায় থেকে সমস্যা হচ্ছে তা বুজতে পারবেন না। 

এই জন্য ওয়ার্ডপ্রেসে ডিবাগ মুড চালু করার অপশন আছে। এই অপশন চালু থাকলে আপনি কোথায় সমস্যা হয়েছে তা বুজতে পারবেন। অন্যদিকে ইরর লগ দেখে সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত ও গভির ধারনা পাবেন। সর্বোপরি, ক্র্যাশ রিকভারি প্লানের সর্বপ্রথম স্টেপ হচ্ছে সমস্যা খুঁজে বের করা এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া। 

ওয়ার্ডপ্রেস ব্যাকআপ

নিয়মিত ব্যাকআপ নিতে হবে

নিয়মিত ব্যাকআপ নেওয়া ডাটার সুরক্ষার জন্য বেস্ট প্র্যাকটিস। এতে কোন কারণে যদি আপনার ডাটা ডিলিট হয়ে যায় তাহলে সহজেই ব্যাকআপ থেকে তা রিকভার করা যায়। ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ব্যাকআপ নেওয়ার জন্য আপনি জনপ্রিয় দুইটি পদ্ধতি ব্যাবহার করতে পারবেন। এর মধ্যে প্লাগিন ইউজ করে ব্যাকআপ নেওয়া টেকি এবং ননটেকি সবার জন্য উপযুক্ত। কিন্তু আপনি যদি অ্যাডভান্স লেভেলের ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে কন্ট্রোল প্যানেল থেকে ম্যানুয়ালি ব্যাকআপ নিতে পারবেন। 

আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে হোস্টিং থেকে ব্যাকআপ নেওয়া। অনেক হোস্টিং রয়েছে যারা তাদের কাস্টমারদের কিছু অর্থের বিনিময়ে ব্যাকআপ সেবা প্রদান করে থাকে। তবে আপনি আইটিনাট হোস্টিং এর প্রায় সকল প্যাকেজে ফ্রীতে সাপ্তাহিক ও ব্যাকআপ সেবা নিতে পারবেন। দৈনিক ব্যাকআপ সেবা নিতে হলে এই হোস্টিং সহ অন্যান্য হোস্টিং এ কিছু পরিমানে অর্থ খরচ করতে হবে। 

সার্ভার আপটাইম নিয়মিত মনিটর করতে হবে 

সার্ভার আপটাইম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন ওয়েবসাইট লাইভ থাকার পেছনে সবথেকে বেশি কাজ করে সার্ভার লাইভ থাকা। আপনার ওয়েবসাইটে যদি কোন সমস্যা না থাকে কিন্তু সার্ভার যদি ডাউন থাকে তাহলে ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে থাকবে। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটের পারফর্মেন্স সম্পূর্ণ নির্ভর করে সার্ভারের উপরে। 

যাইহোক, আপনি যখন কোন সার্ভার নিতে যাবেন তখন সেখানে আপটাইম উল্লেখ করা আছে দেখবেন। এর দ্বারা বোঝায় সার্ভার কত সময় লাইভ থাকে এবং কত সময় ডাউন থাকে। এখানে সবাই দেখবেন ৯৯.৯% সময় সার্ভার লাইভ থাকে তা মেনশন করে। এই তথ্য সবার জন্য সঠিক নয়। 

অনেক কমদামি এবং মানহীন হোস্টিং রয়েছে যারা কাস্টমারকে ৯৯.৯% আপটাইমের প্রতিশ্রুতি দেয় তবে প্রায় সময় তারা তা মানতে পারে না। আপনি আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট যে সার্ভারে হোস্ট করা আছে তার আপটাইম মনিটর করার জন্য অনেক টুল পাওয়া যায়। সার্ভারে কোন সমস্যা দেখা দিলে এই সকল টুল এসএমএস, নোটিফিকেশন, ইমেইল ইত্যাদির মাধ্যমে আপনাকে জানিয়ে দিবে। এতে আপনি সমস্যা হওয়ার সাথে সাথে দ্রুত তা সমাধান করতে পারবেন। 

ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি শক্তিশালী করতে হবে

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি শক্তিশালী করার জন্য আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে। প্রথমে ওয়েবসাইটে ব্যবহার করা পাসওয়ার্ডগুলো যাতে স্ট্রং ও সহজে অনুমান করা না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। পূর্বে ব্যবহার করা পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করে তার থেকেও কঠিন পাসওয়ার্ড ইউজ করতে হবে। 

টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেটর একটি ডাবল লেয়ার সিকিউরিটি সিস্টেম। আপনার সাইটে এই সিস্টেম অ্যাড করলে তা প্রতিবার লগইন করার সময় ভেরিফাই করে নিবে। অর্থাৎ হ্যাকারের কাছে আপনার পাসওয়ার্ড থাকলেও সে লগইন করতে পারবে না। 

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে হ্যাকার এবং ম্যালওয়ার অ্যাটাকের সব থেকে বড় কারণ হচ্ছে আউটডেটেড থিম, প্লাগিন ইত্যাদি। সিকিউরিটি বৃদ্ধি করার জন্য সর্বপ্রথম এই সকল ফাইল আপডেট দিতে হবে। 

সিকিউরিটি প্লাগিন ইউজ করে আপনি সহজেই সাইটের সিকিউরিটি বাড়াতে পারবেন। অনেকেই অনেক ধরনের সিকিউরিটি প্লাগিন ইউজ করে থাকে। এদের মধ্যে Sukuri ও Wordfence অন্যতম। এই প্লাগিন গুলো ওয়েবসাইটে ফায়ারওয়াল সেটআপ করে সম্ভাব্য অ্যাটাক থেকে মুক্ত রাখে। 

ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি

ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট হায়ার করে সমস্যা ফিক্স করতে হবে

যখন উপরে বর্ণিত সকল পদ্ধতি ইউজ করার পরে কোন সমাধান হবে না তখন একজন এক্সপার্টের শরণাপন্ন হতে হবে। অনলাইনে এইরকমের অনেক ফ্রীল্যান্সার পাবেন যারা ক্রিটিকাল মুহূর্তে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। 

ক্র্যাশ রিকভারি প্লানের মধ্যে একজন ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট পাইপলাইনে রাখা জরুরী। কারণ ওয়েবসাইটে ঝামেলা হওয়ার কোন নির্দিষ্ট টাইম থাকে না। আবার যদি লাইভ সাইটে এই সমস্যা হয় তখন দ্রুততার সাথে সমাধান না করলে ভিজিটর হারানোর ভয় থাকে। 

প্লান কাজ করছে কিনা তা চেক করে দেখা 

ক্র্যাশ রিকভারি প্লান কাজ করছে কিনা তা একবার চেক করে দেখতে হবে। কারণ চেক করে না দেখলে আপনি তো নিশ্চিত থাকতে পারছেন না যে আপনার প্ল্যান কাজ করছে কিনা। এই জন্য আপনার সাইটের একটি স্টেজিং ভার্সন তৈরি করে তাতে সমস্যা তৈরি করে তা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। যদি সব ঠিক মত কাজ করে তাহলে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে সব ঠিক আছে। 

উপরিউক্ত আলোচনায় ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের ক্র্যাশ রিকভারি প্লান ও ইরর সমাধানের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এখানে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ক্র্যাশ করলে কি কি পদক্ষেপ নিবেন সে বিষয়ে ধারনা দেওয়া হয়েছে। 

Leave a Reply