You are currently viewing ই-কমার্স ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান কি এবং ডাটাবেজ অপ্টিমাইজ করার উপায়
ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান

একটি অনলাইন স্টোরের জন্য ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ই-কমার্স ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য ডাটাবেজের উপরে পুরোপুরি নির্ভরশীল হয়ে থাকে। কারণ প্রোডাক্টের সকল ডাটা এই ডাটাবেজে সংরক্ষিত থাকে এবং ওয়েবসাইটে যখন কোন প্রোডাক্ট ওপেন করা হয় তখন উক্ত প্রোডাক্ট সম্পর্কিত সকল ডাটা ডাটাবেজ থেকেই ওপেন হয়ে থাকে। যে কারণে প্রতিটি অনলাইন স্টোরের জন্য ডাটাবেজ পরিচালনা করা অনেক জরুরি। 

তবে নিয়মিতভাবে বিভিন্ন প্রোডাক্ট অ্যাড হওয়ার পাশাপাশি যে ট্রানজেকশন গুলো হয়ে থাকে তার জন্য ডাটাবেজ সাইজ অনেক বেড়ে যায়। সাইজ বেশি হওয়ার কারণে কুয়েরি প্রসেস হতে বেশি সময় লাগে যা ওয়েবসাইটের ফাংশনালিটি কমিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে ই-কমার্স হোস্টিং নেওয়ার পূর্বে আপনাকে স্টোরেজ ক্যাপাসিটি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া জরুরী। এই সমস্যা সমাধানের জন্য ই-কমার্স ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান করতে হয়। আমাদের আজকের লেখায় আমরা ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান কি এবং কি উপায়ে করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। 

ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান কি? 

ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান হচ্ছে ডাটাবেজের পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করা। যাতে এটি সবসময় স্মুথভাবে কুয়েরি প্রসেস করতে পারে। ডায়নামিক ওয়েবসাইটগুলো পরিচালনার জন্য ডাটাবেজের প্রয়োজন হয়ে থাকে। বিশেষ করে ই-কমার্স ওয়েবসাইট অপারেত করার জন্য ডাটাবেজের কোন বিকল্প নেই। কারণ ই-কমার্স ওয়েবসাইটে ফ্রন্টে আমরা যা দেখি তার সকল ডাটা স্টোর করা থাকে ডাটাবেজে। 

যেমন ধরুন আপনি একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটে কোন প্রোডাক্টের লিংকে ক্লিক করে ওপেন করলেন। এখানে ক্লিক করার পর ওয়েবসাইটের ফ্রন্ট-এন্ড ডাটাবেজ সফটওয়্যারের কাছে উক্ত প্রোডাক্টের ডাটা চেয়ে রিকোয়েস্ট সেন্ড করবে। রিকোয়েস্ট সেন্ড হওয়ার পর ডাটাবেজ সফটওয়্যার উক্ত ডাটা খুঁজে বের করে তা প্রসেস করে ফ্রন্ট-এন্ডে সেন্ড করবে। 

এই সম্পূর্ণ প্রসেস সম্পন্ন হয়ে থাকে মিলি সেকেন্ডের মধ্যে। এখন যদি কোন কারণে এই ডাটা প্রসেস হতে বেশি সময় লাগে তাহলে ফ্রন্ট-এন্ডে ডাটা শো হতে অনেক বেশি সময় প্রয়োজন হবে। যা ওয়েবসাইটের রেপুটেশনের জন্য অনেক ক্ষতিকর। ডাটা প্রসেস হতে বেশি সময় লাগার যত কারণ আছে তার মধ্যে আন-অপ্টিমাইজড ডাটাবেজ অন্যতম। মূলত ডাটাবেজে যখন কুয়েরি সেন্ড করা হয় তখন তা যদি অন্য কোন কুয়েরি রিকোয়েস্ট দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত না হয় তাহলে কিন্তু ডাটা দ্রুত পাস হয়। 

ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান করার মাধ্যমে এই কুয়েরি প্রোসেসিং ও ট্রান্সমিশন দ্রুত করা হয়। যা ওয়েবসাইটের লোড স্পিড ও পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করে থাকে। এখানে আপনি সহজে কীভাবে ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান করতে পারবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান করার উপায়

ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান করার উপায়

নিচে সঠিক ও কার্যকরী উপায়ে ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হল। 

কুয়েরি ইনডেক্সিং 

ডাটাবেজ ইনডেক্স হচ্ছে একটি ম্যাপ যা ডাটাবেজে কোথায় কি আছে অর্থাৎ কোন টেবিলে কি ডাটা আছে তা সুন্দর করে সাজিয়ে প্রদর্শিত করে থাকে। এই ইনডেক্স যত অগোছালো ও ঝামেলাপূর্ণ হবে ডাটা খুঁজে বের করা তত কঠিন হয়ে পরবে। কারণ আমরা যখন ফ্রন্ট-এন্ডে কোন ডাটার জন্য রিকোয়েস্ট সম্পন্ন করি তখন তা ডাটাবেজে কুয়েরি সেন্ড করে। উক্ত কুয়েরি রিকোয়েস্ট ডাটাবেজের ভেতরে সব টেবিল খুঁজে তারপর ডাটা কালেক্ট করে থাকে। 

এখানে যদি উক্ত টেবিল এবং টেবিলের ভেতরের ডাটা সুন্দর করে ক্রম অনুযায়ী সাজানো থাকে তাহলে কিন্তু অতি দ্রুত ডাটা খুঁজে পাওয়া যাবে। এতে ওয়েবসাইটের পারফর্মেন্স অনেক বৃদ্ধি পাবে। ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান করার জন্য সবার প্রথমে এই ইনডেক্সিং নিয়ে কাজ করতে হবে। সঠিক পদ্ধতিতে ইনডেক্সিং সমস্যা ফিক্স করার জন্য নিচে বর্ণিত দুইটি পদ্ধতি আলোচনা করা হলো। 

  • স্ট্রাটেজিক ইনডেক্সিং: ইনডেক্সিং অপ্টিমাইজ করার জন্য সবার প্রথমে যে যে টেবিল গুলো বারবার ইউজ হয় সেগুলো খুঁজে বের করতে হবে। তারপর শুধু সেই টেবিল গুলোর জন্য ফ্রেশ ইনডেক্স তৈরি করতে হবে। এতে যখন ডাটাবেজে রিকোয়েস্ট আসবে তখন যেন ইনডেক্স ফলো করে ডাটা খুঁজে পাওয়া যায়। এতে ডাটা প্রোসেসিং স্পিড বৃদ্ধি পাবে। 
  • সঠিক ইনডেক্স টাইপ: ডাটাবেজ পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করার জন্য ইনডেক্সিং করার পূর্বে সঠিক ইনডেক্স টাইপ নির্ধারণ করে নিতে হবে। সাধারণত একেক ধরনের ডাটার জন্য আলাদা আলাদা ইনডেক্স টাইপ যেমন Hash, B-Tree বা Bitmap হয়ে থাকে। এখান থেকে আপনার ডাটাবেজে কোন ধরনের ডাটা রয়েছে সে অনুযায়ী ইনডেক্স টাইপ নির্বাচন করতে হবে। 

ডিফ্রেগ্মেন্ট ডাটা টেবিল 

ডাটাবেজে নিয়মিত ডাটা অ্যাড ও রিমুভ হওয়ার কারণে প্রায় সময় দেখা যায় এগুলো অগোছালো হয়ে থাকে। ডাটা বিক্ষিপ্ত থাকার কারণে কুয়েরি প্রসেস হতে বেশি সময় লাগে যা ওয়েবসাইট স্লো করে দেয়। এই সমস্যা থেকে উত্তরণের একটি উপায় হচ্ছে বিক্ষিপ্ত ডাটাগুলোকে একত্র করা। আর এই কাজ করা হয় ডাটাবেজ ডিফ্রেগ্মেন্টের মাধ্যমে। 

মূলত এই টুল অগোছালো টেবিল এবং তার ভেতরের ডাটাগুলোকে ক্লিন টেবিলে রূপান্তর করে। পাশাপাশি ইনডেক্সিং সমস্যা সমাধান করে। যে কারণে ডিফ্রেগ্মেন্ট করার পর ডাটাবেজের কুয়েরি প্রোসেসিং অনেক ফাস্ট হয়ে যায় এবং ওয়েবসাইটের স্পিড বৃদ্ধি পায়। 

ক্যাশিং ও ইন মেমোরি অপ্টিমাইজেশান

ইন মেমোরি অপ্টিমাইজেশান

ক্যাশিং টেকনোলজি হচ্ছে যে ডাটা বারবার প্রয়োজন হয় তা ক্লাইন্ট সাইডে ডাউনলোড করে রাখা। যাতে বারবার উক্ত ডাটা ডাউনলোড করতে না হয়। এতে ওয়েবসাইটের স্পিড যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি সার্ভার রিকোয়েস্ট অনেক কমে যায়। তো ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান নিশ্চিত করতে হলে ডাটাবেজ ক্যাশিং এর কোন বিকল্প নেই। এই পদ্ধতিতে যে যে রিকোয়েস্ট গুলো বারবার প্রসেস করতে হয় সেগুলো মেমোরিতে স্টোর করে রাখে। পরবর্তীতে যখন উক্ত ডাটার জন্য রিকোয়েস্ট করা হয় তখন ডাটাবেজের সকল টেবিল খুঁজে ডাটা কালেক্ট করার প্রয়োজন পরে না।

মেমোরি থেকেই রিকোয়েস্ট সার্ভ করা হয়। অন্যদিকে ইন-মেমোরি অপ্টিমাইজেশান পদ্ধতিতে ডাটাবেজ গুরুত্বপূর্ণ ডাটা তার স্টোরেজে সংরক্ষণ করে রাখে। পরবর্তীতে যখন প্রয়োজন পরে তখন ডাটাবেজে না ঢুকে মেমোরি থেকে উক্ত রিকোয়েস্ট প্রসেস করা হয়। যা ক্যাশিং এর মত কাজ করলেও আরও বেশি পাওয়ারফুল হয়ে থাকে। 

ডাটাবেজ অ্যাক্সেস তদারকি

ডাটাবেজ অ্যাক্সেস তদারকি হচ্ছে উক্ত ডাটাবেজ কে বা কারা ইউজ করছে তা খুঁজে বের করা। এতে কোন কোন সার্ভিস ডাটাবেজ ইউজ করছে সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। পাশাপাশি এদের মধ্যে যদি কোন সার্ভিস ডাটাবেজে কুয়েরি করার সময় স্লো করে দেয় সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। 

নিয়ন্ত্রিত ভাবে ডাটাবেজ ইউজ করলে এতে যেমন অপ্রয়োজনীয় ডাটা স্টোর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না তেমনি ক্যাপাবিলিটির উপরে চাপ পরে না। এই কারণে ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান করার সময় ডাটাবেজের সাথে কানেক্টেড সার্ভিস এবং ইউজার রিভিউ করে অতিরিক্ত এবং অপ্রয়োজনীয় ডাটা রিমুভ করে দিতে হবে। 

কুয়েরি রিরাইটিং

এটি হচ্ছে ডাটাবেজে কোন কোন কুয়েরি স্লো কাজ করছে তা খুঁজে বের করা। অনেক ধরনের টুল রয়েছে যারা কোন সার্ভিসের কোন কুয়েরি এক্সিকিউট হতে বেশি সময় নিচ্ছে তা খুঁজে বের করে দেয়। এতে সহজেই ডাটা টেবিলের কোন কুয়েরি স্লো কাজ করছে তা খুঁজে বের করে সমাধান করা যায়। কুয়েরি রিরাইটিং করার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই ফুল ডাটাবেজ ব্যাকআপ নিয়ে নিতে হবে। কারণ ডাটাবেজে কোন সমস্যা হলে আপনি যেমন সকল ডাটা হাড়াবেন তেমনি আপনার ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে থাকবে।  

ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান ট্রেন্ড

নিচে সাম্প্রতিক সময়ে প্রচলিত ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান ট্রেন্ড সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। 

  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স: এআই ও মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি ডাটাবেজ কুয়েরি ফিনটিউনিং, কুয়েরি পারফর্মেন্স প্রেডিকশন করে পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করতে কাজ করে। যা কুয়েরি প্রসেস করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 
  • হাইব্রিড ডাটাবেজ: সাধারণত SQL ও NoSQL প্রযুক্তি ইউজ করে হাইব্রিড ডাটাবেজ তৈরি করা হয়। যা ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশনের পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করে থাকে। 
  • রিয়েল-টাইম ডাটাবেজ: Apache Kafka, Flink ও Amazon Kinesis হচ্ছে রিয়েল-টাইম ডাটাবেজ প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির সাথে ডাটা এনালিটিক্স পদ্ধতি ইউজ করে ডাটা অ্যাক্সেসের গতি বৃদ্ধি করে ডাটাবেজ পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করা যায়। 

শেষকথা 

ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এই ধরনের ওয়েবসাইট ডাটা স্টোর ও প্রসেস করার জন্য ডাটাবেজ ব্যবহার করে থাকে। কোন কারণে ডাটাবেজ অ্যাক্সেস করা না গেলে বা ডাটাবেজ স্লো কাজ করলে ওয়েবসাইট স্পিড কমে যাবে। যা বিজনেসের জন্য অনেক ক্ষতিকর। এখানে কি কি উপায়ে আপনি ই-কমার্স ডাটাবেজ অপ্টিমাইজেশান করতে পারবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।   

Leave a Reply