একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর ভিজিটর। ভিজিটর সাইট ভিজিটে সমস্যায় পরলে পটেনশিয়াল কাস্টমার তৈরি হবে না আর কাস্টমার ছাড়া ই-কমার্স বিজনেস পরিচালনা করা সম্ভব না। এই ক্ষেত্রে যে সমস্যা গুলো বেশি হয় তার মধ্যে হোস্টিং অনেক বড় ভূমিকা পালন করে।
আপনি যদি ভালো মানের হোস্টিং সার্ভিস ইউজ না করেন তাহলে কাস্টমার আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করতে সমস্যা বোধ করবে এবং প্রোডাক্ট সেল অনেক কমে যাবে। এখন এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আসলে আমাদের কি করা উচিত? নিচে ই-কমার্স হোস্টিং নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপস ও হোস্টিং নেওয়ার সময় কি কি বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
Table of Contents
ই-কমার্স হোস্টিং নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপস
নিচে ই-কমার্স হোস্টিং নেওয়ার সময় কি কি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
সার্ভারের ধরণ
সার্ভার বিশেষজ্ঞদের মতে ৩ ধরনের ওয়েব হোস্টিং ই-কমার্স এর জন্য সব থেকে বেশি উপযুক্ত। নিচে সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
ডেডিকেটেড সার্ভার
এই সার্ভারের সকল রিসোর্স ইউজারের কন্ট্রোলে থাকে। অন্যদিকে আপনাকে যে রিসোর্স দেওয়া হবে তা অন্য কোন ইউজার ইউজ করবে না। অর্থাৎ আপনি ডেডিকেটেড সার্ভারে সাইট হোস্ট করলে আপনাকে আপনার পার্সোনাল কম্পিউটার যেমন তেমন সার্ভার দেওয়া হবে।
এই সার্ভার কনফিগার থেকে শুরু করে কোন সময় রিসোর্স কমানো বা বাড়াতে পারবেন। বড় ই-কমার্স ওয়েবসাইট হোস্ট করার জন্য এই ধরনের সার্ভার উপযুক্ত। কারণ ভিজিটরের চাপ বাড়তে থাকলে আপনি প্রোসেসিং পাওয়ার বৃদ্ধি সহ অন্যান্য ফিচার বৃদ্ধি করতে পারবেন।
ভিপিএস (ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার)
ভিপিএস সার্ভার শেয়ারড আর ডেডিকেটেড সার্ভারের মধ্যবর্তী একটি বিষয়। এখানে ফিজিক্যাল সার্ভার অন্য ইউজারের সাথে শেয়ার করা হলেও আপনাকে যে অংশ দেওয়া হবে তা শুধু আপনার নিজের জন্য।
অর্থাৎ আপনি অন্য ইউজারের সাথে একই সার্ভারে থাকবেন কিন্তু আপনার রিসোর্স অন্য কেউ ইউজ করবে না। এখানে সাইটের সিকিউরিটি যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি পারফর্মেন্স অনেক বেড়ে যায় এবং স্টাবল থাকে। VPS সার্ভার ছোট ও মাঝারী আকারের ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য বেশি উপযুক্ত।

ক্লাউড সার্ভার
ক্লাউড সার্ভার মূলত একটি ভার্চুয়াল সার্ভার যা অনেকগুলো ফিজিক্যাল সার্ভারের সাথে সংযুক্ত। এই সার্ভারে আপনি আপনার প্রয়োজন মতো রিসোর্স বাড়িয়ে বা কমিয়ে নিতে পারবেন। যে কারণে হটাত সাইটে বেশি পরিমাণ ভিজিটর আসলে যেমন ব্লাক ফ্রাইডে অথবা সাইবার মানডের মতো ইভেন্টে সাইট বন্ধ হয়ে যাবে না।
যে ধরনের ই-কমার্স বিজনেসে অনেক বেশি পরিমানে ভিজিটর আসে অথবা অনেক বড় অনলাইন শপ তাদের জন্য এই সার্ভার সবথেকে বেশি উপযুক্ত। এই সার্ভারে আপ্টাইম যেমন বেশি পাওয়া যায় তেমনি পারফর্মেন্স অনেক ভালো পাওয়া যায়।
শেয়ার্ড হোস্টিং
শেয়ার্ড হোস্টিং এর সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে এখানে সার্ভার রিসোর্স উক্ত সার্ভারের সকল ইউজারের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। যে কারণে অনেক সময় উক্ত সার্ভারে থাকা কোন সাইটে বেশি ভিজিটর চলে আসলে অন্য সাইটগুলোতে ইফেক্ট পরতে পারে। এই জন্য ছোট পরিসরে ই-কমার্স সাইট শুরু করার জন্য শেয়ার্ড হোস্টিং নেওয়া যেতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে বিজনেস নিয়ে অনেক বড় পরিকল্পনা থাকলে এই হোস্টিং ইউজ না করাই ভালো।
হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশন
সার্ভার কেমন পারফর্ম করবে তা নির্ভর করে হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশনের উপরে। নিচে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
সিপিইউ
সার্ভারে থাকা সিপিইউ এর প্রধান কাজ হচ্ছে সার্ভারে আসা রিকোয়েস্ট প্রসেস করা। আপনার সার্ভারের সিপিইউ প্রসেস পাওয়ার যত বেশি হবে তত ভালো। একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটের জন্য কমপক্ষে ৪ কোর এর সিপিইউ সাজেস্ট করা হয়। তবে ওয়েবসাইট যটি অনেক বড় হয় বা অনেক বেশি রিকোয়েস্ট হ্যন্ডেল করার প্রয়োজন পরে তবে ৮ কোর থেকে বেশি সিপিইউ পাওয়ার বেশি উপযুক্ত।
র্যাম
আমরা জানি কম্পিউটারে র্যাম যত বেশি হয় পারফর্মেন্স তত বেশি পাওয়া যায়। সার্ভারের ক্ষেত্রে ঠিক এমনি। ই-কমার্স বিজনেসের জন্য কমপক্ষে ৮ জিবি র্যামকে স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়। তবে যে সাইটে অনেক বেশি ভিজিটর আসে বা অনেক বেশি পরিমানে রিকোয়েস্ট হ্যান্ডেল করার প্রয়োজন পরে সেখানে ১৬ জিবি বা তার বেশি র্যাম উপযুক্ত।
স্টোরেজ
এটা নির্ভর করে ই-কমার্স ওয়েবসাইটের সাইজের উপরে। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটের প্রোডাক্ট সংখ্যা, ডাটাবেস সাইজ, মিডিয়া ইত্যাদির উপর নির্ভর করে স্টোরেজ ঠিক করা উচিত। ছোট পরিসরে শুরু করার জন্য ১০০ জিবি দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। তবে এই ক্ষেত্রে ট্র্যাডিশনাল HDD না নিয়ে SSD স্টোরেজ নির্বাচন করতে হবে। কারণ এসএসডি স্টোরেজের ডাটা রিড-রাইট স্পিড অনেক বেশি হয়। যা ওয়েবসাইটের পারফর্মেন্স বৃদ্ধি করে।
ব্যান্ডউইথ
ব্যান্ডউইথ ওয়েবসাইট ও ভিজিটরের মধ্যে কি পরিমানে ডাটা আদান-প্রদান হয়েছে তা নির্দেশ করে। অর্থাৎ একজন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করার সময় তার কম্পিউটারে কি পরিমাণ ডাটা ডাউনলোড হচ্ছে তা নির্দেশ করে থাকে। যেহেতু ই-কমার্স ওয়েবসাইটে অনেক বেশি পরিমানে ভিজিটর আসার সম্ভাবনা থাকে সেহেতু ব্যান্ডউইথ আনলিমিটেড অথবা শুরু করার জন্য ১০০০ জিবি প্রতি মাস উপযুক্ত। বর্তমানে ওয়েবহোস্টিং সার্ভিসগুলো অনেক প্যাকেজে আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ দিয়ে থাকে।
ব্যাকআপ
ব্যাকআপ স্টোরেজ প্রতিটি ওয়েবসাইটের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ই-কমার্স ওয়েবসাইটে ব্যাকআপ সিস্টেম থাকা অনেক জরুরী। এর কারণ এই ধরনের ওয়েবসাইটে অর্ডার ডিটেইলস সহ কাস্টমারের অনেক প্রয়োজনীয় ডাটা থাকে। ব্যাকআপ স্টোরেজ না থাকলে অথবা কোন কারণে সার্ভার ফেইল হলে অথবা অন্য কোন কারণে ডাটা লস হলে ঝামেলার সৃষ্টি হবে। ব্যাকআপ সিস্টেম থাকলে ডাটা লস হলেও তা রিকভার করা যাবে। হোস্টিং নেওয়ার পূর্বে এই সকল বিষয় সম্পর্কে ভালো করে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
সেরা ১০ টি ই-কমার্স ওয়েবসাইট মেইনটেনেন্স টিপস
সিকিউরিটি সুবিধা
ই-কমার্স হোস্টিং নেওয়ার পূর্বে সার্ভারে যে যে সিকিউরিটি সুবিধা থাকতে হবে তা নিচে বর্ণনা করা হলো।
এসএসএল (SSL)
এসএসএল ইউজার ও ব্রাউজার এর মধ্যকার ডাটা আদান-প্রদানকে এনক্রিপ্ট করে যাতে এই ডাটা অন্য কেউ নিজের কাজে ইউজ করতে না পারে। অন্যদিকে কাস্টমার ডাটা ও পেমেন্ট মেথড সিকিউর রাখার জন্য এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। SSL এসইও তে অনেক পজিটিভ ইফেক্ট ফেলে এবং ভিজিটরের মনে ট্রাস্ট তৈরি করে।
ফায়ারওয়াল
হোস্টিং নেওয়ার পূর্বে দেখে নিতে হবে তাতে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার বেসড ফায়ারওয়াল ইউজ করা হয়ে নাকি। ফায়ারওয়ালের মূল কাজ্জ হচ্ছে ইন্টারনেট ট্র্যাফিক ফিল্টার করে সার্ভারকে এবং সাইটকে সুরক্ষা প্রদান করা। বিশেষ করে ই-কমার্স হোস্টিং নেওয়ার সময় এই বিষয়ে এক্সট্রা গুরুত্ব দিতে হয়।

ম্যালওয়্যার প্রোটেকশন
ওয়েবসাইটে ম্যালওয়্যার অ্যাটাক অনেক বড় সমস্যা। বিশেষ করে আর্থিক লেনদেন থাকা ওয়েবসাইট যেমন ই-কমার্সে এই সমস্যা অন্য সাইটের থেকে একটু বেশি পরিমানে হয়ে থাকে। এই ঝামেলা থেকে উত্তরণের জন্য সবার প্রথমে প্রয়োজন পরে ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করা। আপনি আপনার ই-কমার্স বিজনেসের জন্য যে ধরনের সার্ভার নিতে চাচ্ছেন সে সার্ভারে ম্যালওয়্যার প্রোটেকশনের জন্য কি ইউজ করা হয় সে সম্পর্কে অবশ্যই জেনে নিতে হবে।
ডিডস (DDoS) প্রোটেকশন
ডিডস অ্যাটাক করা হয় সাইটে একই সাথে অনেকগুলো সার্ভার রিকোয়েস্ট সেন্ড করে। এই অ্যাটাকের মূল উদ্দেশ্য সার্ভারের সকল রিসোর্স ব্যাস্ত রাখা যাতে সাইট ডাউন হয়ে থাকে। বর্তমান সময়ে ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস গুলো ডিডস অ্যাটাক থেকে সুরক্ষা দিতে ক্লাউডফ্লেয়ারের মতো সিডিএন সার্ভিস ইউজ করে থাকে। আপনি সার্ভার নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নেবেন।
কন্ট্রোল প্যানেল
সার্ভারের সকল সেটিংস ও ব্যবহার খুঁজে পাওয়ার জন্য কন্ট্রোল প্যানেল ইউজ করা হয়।
সিপ্যানেল/প্লেস্ক
বর্তমানে অনেক ধরনের প্যানেল পাওয়া গেলেও সব থেকে বেশি ব্যবহৃত প্যানেল হচ্ছে সিপ্যানেল। এটি অনেক বেশি ইউজার ফ্রেন্ডলি ও এর কমিউনিটি অনেক বড়। যে কারণে কোন সমস্যায় পরলে দ্রুত সমাধান পাওয়া যায়। সিপ্যানেল বাদেও প্লেক্স, সাইবার প্যানেল সহ আরও অনেক কন্ট্রোল প্যানেল রয়েছে। যদিও সকল প্যানেলের মূল কাজ একই। তবে আপনি সার্ভার নেওয়ার সময় নিশ্চিত হয়ে নেবেন যদি লিনাক্স ভিত্তিক সার্ভার হয় তাহলে সিপ্যানেল ও উইন্ডোজ ভিত্তিক সার্ভার হলে প্লেস্ক বেশি উপযুক্ত।
কমান্ড লাইন
এটা সাধারণত যারা অ্যাডভান্স ইউজার তাদের জন্য। এই কন্ট্রোল প্যানেলে সার্ভার ম্যানেজ করার জন্য কমান্ড লাইন ইউজ করা হয়। সাধারণ ইউজারের জন্য এই প্যানেল একদম উপযুক্ত নয়।
ডাটাবেস
ওয়েবসাইট সঠিকভাবে পরিচালনা থেকে শুরু করে এর ডাটা রাখার জন্য ডাটাবেস প্রয়োজন পরে। নিচে ই-কমার্স হোস্টিং এর জন্য কোন ধরনের ডাটাবেস বেশি উপযুক্ত সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
MySQL/PostgreSQL
এই ধরনের ডাটাবেস ই-কমার্স প্রোজেক্ট এর জন্য সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয়। আমরা জানি ওয়ার্ডপ্রেসে ই-কমার্স বিজনেস পরিচালনা করার সফটওয়্যার উকমার্স সবথেকে বেশি জনপ্রিয়। আর উকমার্স পরিচালিত হয় মাইএসকিউএল ডাটাবেসের সাহায্যে। যদি আপনি ওয়ার্ডপ্রেসে আপনার বিজনেস পরিচালনা ক্রতে চান তাহলে আপনার সার্ভারে এই ডাটাবেসগুলো সাপোর্ট করে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। যদিও প্রায় সকল হোস্টিং সার্ভিস এই কমন ডাটাবেস ইউজ করে থাকে।
ডাটাবেস অপটিমাইজেশন
ই-কমার্স ওয়েবসাইটে নিয়মিত ভিজিটর আসে এবং কেনাকাটা করে থাকে। যে কারণে ডাটাবেস অনেক দ্রুত সময়ে বড় হতে থাকে যা নিয়মিত অপ্টিমাইজ করা জরুরী। আপনি যখন ই-কমার্স হোস্টিং নির্বাচন করবেন তখন সার্ভারে এই ফিচার আছে কিনা সে সম্পর্কে অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
সিডিএন
সিডিএন সার্ভিস ইউজ করলে আপনার ওয়েবসাইটের একটি ডাউনলোড করা ভার্সন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সার্ভারে জমা থাকবে। যখন কোন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করবে তখন তার লোকেশনের কাছে যে সার্ভার থাকবে সেই সার্ভার থেকে ওয়েবসাইট ভিজিট হবে। এতে ওয়েবসাইট আর ভিজিটরের মধ্যকার ল্যাটেন্সি কমে যাবে।
বর্তমান সময়ে অনেকগুলো সিডিএন সার্ভিস পাওয়া গেলেও ক্লাউডফ্লেয়ার সবথেকে বেশি পপুলার। অনেক হোস্টিং সার্ভিস রয়েছে যারা সার্ভারের সাথে ফ্রী এবং প্রিমিয়াম সিডিএন দিয়ে থাকে। ই-কমার্স হোস্টিং নেওয়ার পূর্বে এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে ।
ক্যাশিং
ক্যাশিং ম্যাকানিজম ওয়েবসাইটের স্পিড ও পারফর্মেন্সে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। নিচে ই-কমার্স এর জন্য কোন ক্যাশ মেথড বেশি উপযুক্ত সে সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
বার্নিশ ক্যাশ
এই ক্যাশ মেথড সার্ভারে প্রেরিত HTTP রিকোয়েস্ট ক্যাশ করে সার্ভার রেস্পন্স টাইম কমিয়ে আনে। এতে সাইট অনেক কম সময়ে লোড হয়। ইকমার্স ওয়েবসাইটের জন্য এই ধরনের ক্যাশ সার্ভিস অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
রেডিস/মেমক্যাশ
এই ধরনের ক্যাশ মেথড যে রিকোয়েস্ট গুলো বারবার সার্ভারে প্রেরন করা হয় তা ক্যাশ করে রাখে। এতে প্রতিবার ভিজিট করার সময় সার্ভারের অল্প পরিমানে রিকোয়েস্ট হ্যান্ডেল করতে হয়। যে কারণে সাইট অনেক দ্রুত লোড হয় এবং পারফর্মেন্স বৃদ্ধি পায়। ই-কমার্স হোস্টিং নেওয়ার আগে সার্ভারে কোন ক্যাশ টেকনোলজি ইউজ করা হয়েছে সে সম্পর্কে জেনে নিতে হবে।

সফটওয়্যার স্পেসিফিকেশন
ই-কমার্স সার্ভার নেওয়ার সময় আমাদের কোন প্লাটফর্ম ইউজ করবো সে বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে হয়। নিচে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
ম্যাজেন্টো
আপনি ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য এই প্লাটফর্ম বেছে নিতে চাইলে অবশ্যই ডেডিকেটেড অথবা ক্লাউড হোস্টিং নিতে হবে। কারণ ম্যাজেন্টো অনেক ভারী প্লাটফর্ম এবং এতে অনেক বেশি পরিমানে রিসোর্স ইউজ হয়ে থাকে।
উকমার্স
উকমার্স ম্যাজেন্টো থেকে অনেক কম রিসোর্স ইউজ করে এবং প্রায় সকল ধরনের সার্ভারে চলে। তবে যদি বেশি পরিমানে ভিজিটর হ্যান্ডেল করার প্রয়োজন পরে তবে অবশ্যই ক্লাউড অথাবা ডেডিকেটেড সার্ভার বেশি উপযুক্ত।
প্রিস্টাশপ
এটি অনেকটা ম্যাজেন্টোর মতই। তবে প্রিস্টাশপ ম্যাজেন্টোর থেকে অনেক কম্পরিমানে রিসোর্স ইউজ করে থাকে। এটি একটি ওপেনসোর্স প্রোডাক্ট যা ছোট ও মাঝারী ই-কমার্স বিজনেস পরিচালনা করার জন্য উপযুক্ত।
ইমেইল হোস্টিং
ই-কমার্স ওয়েবসাইটে অর্ডার কনফার্মেশন ও ইনভয়েস তৈরি করার জন্য ইমেইল সার্ভিসের প্রয়োজন পরে। আর এই ইমেইল গুলো সংরক্ষণ করার জন্য ইমেইল হোস্টিং দরকার হয়। এই ক্ষেত্রে আপনার ডেডিকেটেড ইমেইল সার্ভার ইউজ করা বেশি ভালো হবে।
চাইলে আপনি Amazon SES, SendGrid, অথবা Mailgun এর মত সার্ভিস ইউজ করতে পারেন। অন্যদিকে SPF, DKIM বা DMARC দিয়ে সেলফ-হোস্টেড ইমেইল সার্ভার কনফিগার করে নিতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে আপনি যে হোস্টিং নির্বাচন করার কথা ভাবছেন তা কতগুলো ইমেইল অ্যাকাউন্ট দিবে এবং কি পরিমাণ স্পেস দিবে সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
সাপোর্ট
হোস্টিং সার্ভিসের জন্য সাপোর্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে ই-কমার্স ওয়েবসাইট হোস্ট করার পূর্বে উক্ত সার্ভিসের সাপোর্ট সিস্টেম সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। এর কারণ যখন আপনি আপনার বিজনেস অনলাইনে রান করবেন তখন সাইট ডাউন থাকলে অনেক বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। ওইরকম মুহূর্তে যাতে হোস্টিং সার্ভিস থেকে সকল ধরনের সাহায্য পাওয়া যায় সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে।
উপরিউক্ত আলোচনায় ই-কমার্স হোস্টিং নেওয়ার পূর্বে আপনাকে কি কি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে সার্ভার নেওয়ার সময় সার্ভারের ধরণ, হার্ডওয়্যার স্পেসিফিকেশন এই বিষয় গুলা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। পাশাপাশি সার্ভারের সিকিউরিটির উপরে বেশি পরিমানে গুরুত্ব দিতে হবে।