আমাদের সবারই একটি করে নাম রয়েছে, এই নাম ধরে ডাকলে আমরা সারা দেই। ঠিক তেমনি ওয়েবসাইটের নাম হলো ডোমেইন, ব্রাউজারে যখন ডোমেইন নেম লিখে সার্চ করি তখন ওয়েবসাইট আমাদের ডাকে সারা দেয়, অর্থাৎ আমরা ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারি এবং আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারি।
সহজ ভাবে বললে: ওয়েবসাইট নাম বা এড্রেস হলো ডোমেইন।
ডোমেইন এর আরো একটি পরিচয় রয়েছে সেটি হল IP অ্যাড্রেস। ডোমেইন মূলত একটি IP অ্যাড্রেস। এখন আপনি হয়তো ভাবছেন একটু আগেই বললাম ডোমেইন হলো ওয়েবসাইট এর নাম আবার এখন বলছি IP অ্যাড্রেস, তো চলুন একটু আইপি এড্রেস সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
IP অ্যাড্রেস কি?
IP অ্যাড্রেস এর পূর্ণ রুপ হল “Internet Protocol” যার বাংলা অর্থ Internet ব্যবহার করার নিয়ম নিতি। আমরা যখন Internet ব্যবহার করি তখন আমাদের এই নিয়ম নিতি আনুসরন করেই ব্যবহার করতে হয়।
Internet ব্যবহার করার জন্য প্রত্যেকটি ডিভাইস এর একটি IP অ্যাড্রেসের সাথে যুক্ত হতে হয়, অর্থাৎ প্রতিটি ডিভাইস Internet এর সাথে সংযুক্ত হবার জন্য আলাদা আলাদা IP অ্যাড্রেস ব্যবহার করে। যেটি দেখতে এই রকম 192.168.10.20 সংখ্যার হয়ে থাকে। এই লিঙ্ক ভিজিট করে আপনি আপনার নিজের ডিভাইস এর IP অ্যাড্রেস দেখতে পারবেন।
কম্পিউটার কিন্তু ০,১ অর্থাৎ বাইনারি ছাড়া কিছু বোঝে না তার মানে আমরা ব্রাউজারে যখন ডোমেইন নেম লিখে সার্চ করি তখন ডোমেইন নেম IP অ্যাড্রেস এর ব্যবহার করে সার্ভার থেকে ডাটা এনে আমাদের দেয় যা আমরা ব্রাউজার এ দেখতে পাই।
কেন ডোমেইন নেম তৈরি করা হয়েছিল ?
আমরা জানি IP অ্যাড্রেস কতগুলো নাম্বারের সমন্বয়ে গঠিত। বর্তমানে পৃথিবী তে প্রায় ১.১৮ বিলিয়ন এর বেশি ওয়েবসাইট রয়েছে, তাহলে একবার ভাবুন এতগুলো ওয়েবসাইট এর নাম আমরা কিভাবে মনে রাখবো। এই সমস্যার সমাধান করার জন্যই ডোমেইন নেম বা DNS (Domain Name System) তৈরি করা হয়ে ছিল।
আমরা সবাই জানি যে ফেসবুক এর ডোমেইন নেম facebook.com আমরা যখন এই নাম দিয়ে সার্চ করি তখন Facebook এর ওয়েবসাইট চলে আসে এবং আমরা সেটি Browse করতে পারি।
ঠিক একি ভাবে আমরা যদি ফেসবুক এর IP অ্যাড্রেস ব্যবহার করে সার্চ করি তাহলেও আমরা ফেসবুক Browse করতে পারবো। আপনি আপনার ব্রাউজার এর URL Box এ 157.240.1.35 এই IP অ্যাড্রেস দিয়ে সার্চ করলে দেখতে পারবেন www.facebook.com ওয়েবসাইট টি ওপেন হয়েছে।
ডোমেইন এর প্রকারভেদ
আমরা যখন কোন ডোমেইন নেম এর কথা চিন্তা করি তখন আমরা সবার আগে .com ভাবি। কারন এটি সব থেকে পপুলার নাম গুলর মধ্যে একটি। কিন্তু .com ছাড়াও আরো প্রায় হাজার রকমের ভিন্ন Domain Extension রয়েছে। এবার চলুন সেই Extension গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
ডোমেইন নেম মূলত ৫ ধরনের হয়ে থাকে
- Top-Level Domains
- Country Code Top Level Domains
- Generic Top-Level Domains
- Second-Level Domains
- Third Level Domains
Top-Level Domains
ইন্টারনেট Hierarchy তে যেই ডোমেইন Extention গুলো সব থেকে উপরে রয়েছে বা বেশি ব্যবহৃত হয় সেগুলোই হল TLD অর্থাৎ টপ লেভেল ডোমেইন যেমন : .com, .net, .org
Country Code Top Level Domains
CCTLD এই ডোমেইন গুলোর মাধ্যমে কোন একটি নিদির্ষ্ট দেশের ওয়েবসাইট কে বুঝানো হয়। উদাহরণস্বরূপ .bd দিয়ে বাংলাদেশ, .in দিয়ে ইন্ডিয়া, .us দিয়ে আমেরিকা, .ca দিয়ে ক্যানাডা বুঝানো হয়ে থাকে।
Generic Top-Level Domains
GTLD এই ডোমেইনগুলো সাধারন ডোমেইন এর মতই কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষ এর ব্যবহার অনেক সিমিত। সাধারন ডোমেইন গুলো যেমন সবাই ব্যবহার করতে পারে এই ডোমেইন গুলো সবাই ব্যবহার করতে পারেনা। উদাহরন স্বরূপ .edu.bd বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া কেও ব্যবহার করতে পারবেনা। .mil.bd সামরিক সংস্থা ছাড়া সাধারন কেউ ব্যবহার করতে পারবেনা।
Second-Level Domains
একটি সেকেন্ড লেভেল ডোমেইন (SLD) হল ডোমেইন নামের অংশ যা একটি টপ লেভেল ডোমেইনের (TLD) ঠিক আগে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, itnuthosting.com – এ SLD হল itnuthosting এবং TLD হল .com
Third Level Domains
একটি Third Level Domain হলো একটি ডোমেইন নাম বা ওয়েবসাইট ঠিকানার অংশ যা Second-Level Domains এর নামের আগে বসে। Third Level Domain কে “সাব-ডোমেইন”ও বলা হয় কারণ তারা কখনো কখনো একটি ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট বিভাগ বা পেজকে নির্দেশ করে।